শহিদুল ইসলাম, উখিয়া (কক্সবাজার):
টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের বি ব্লকের ১০৬৯ নং শেডের ৩ নং রুমের বাসিন্দা মালয়েশিয়া প্রবাসী আবদুল্লাহ স্ত্রী সালেহা বেগম (২৫) এর বাড়ি থেকে ১ হাজার পিছ ইয়াবা উদ্ধার এবং ভয়ভীতি ও হুমকি ধমকি দিয়ে টাকা আদায়ের ঘটনায় ক্যাম্প অভ্যন্তরে তোলপাড় চলছে। গত ৩ দিন ধরে এ ঘটনা নিয়ে নয়াপাড়া শিবিরে সাধারণ শরণার্থী এবং ক্যাম্প প্রশাসন মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। উত্তেজনাকর এ পরিস্থিতিকে সামাল দিতে ক্যাম্প প্রশাসন ব্যাপক তৎপর হয়ে উঠেছে বলে শরণার্থীদের অভিযোগে জানা গেছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮ টার দিকে সালেহার বাড়ি থেকে ১ হাজার পিছ ইয়াবা উদ্ধার করার পর ক্যাম্প পুলিশের আইসি মোঃ রাসেল ও ক্যাম্প ইনচার্জ কার্যালয়ের দালাল উলা মিয়ার যোগসাজসে রফিকুল কাদের (২২) ও আবছার (১৭) কে আটক করে। আটককৃত যুবকদের মামলার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে নগদ ১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের বি ব্লকের এক যুবককে ২৮ সেপ্টেম্বর ব্যাপক মারধর করার পর তার কাছ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা আদায় করে। এছাড়া ২৯ সেপ্টেম্বর ওই যুবকের স্ত্রী ও বৃদ্ধ পিতাকে ধরে নিয়ে ক্যাম্প পুলিশের আইসি রাসেল ব্যাপক নির্যাতন চালায়। এ ঘটনা নিয়ে বর্তমানে প্রশাসন এবং শরণার্থী মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।
ক্যাম্প সেক্রেটারী মাহমুদুল হক জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর সালেহার বাড়ি থেকে ১ হাজার পিছ ইয়াবা উদ্ধার করে তা আত্মসাতের পায়তারা করে। এ ঘটনা জানাজানি হলে ২ দিন পর এ ১ হাজার পিছ ইয়াবার মধ্যে ক্যাম্প ইনচার্জ জালাল উদ্দিনের নিকট ৭ শ পিছ ইয়াবা জমা দেন। ৩ শ পিছ ইয়াবা গোপন করে রাখে। পুলিশ এবং ক্যাম্প প্রশাসনের এ ধরনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করায় এক রোহিঙ্গা শরণার্থী যুবক ও তার পিতা-স্ত্রীকে ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।
সিনিয়র সহকারী সচিব এসএম সরওয়ার কামাল কর্মরত থাকাকালীন সময়ে সাধারণ শরণার্থীরা শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করে আসলেও বর্তমান সহকারী সচিব ক্যাম্প ইনচার্জ জালাল উদ্দিন যোগদানের পর থেকে শিবিরটিকে অপরাধের অভ্যয়রণ্যে পরিণত করেছে। শুধু তাই নয় ক্যাম্প পুলিশের আইসি রাসেল মিথ্যা, সাজানো ও মানব পাচার এবং ইয়াবার মামলার হুমকি দিয়ে নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরের শরণার্থীদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত হুমকি ধমকি ও নির্যাতন চালিয়ে চাঁদা আদায় করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা সব কিছু অস্বীকার করে বলেন, আমার যাওয়ার সময় হয়েছে। তাই শেষ সময়ে যাহা পাচ্ছি তা নিচ্ছি আর কি। ক্যাম্প জালাল উদ্দিন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে জানার পর ইয়াবাগুলো উদ্ধারের তৎপরতা শুরু করি। পরে অবশ্যই ৭ শ পিছ ইয়াবা আমার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়।
পাঠকের মতামত